
মানুষের জন্য আইনি সহায়তা (মাজআসা) সংগঠন হাইকোর্টের সদ্য ঘোষিত রায়কে “ঐতিহাসিক দলিল” হিসেবে স্বাগত জানায়, যেখানে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায় শুধু একটি আইনি পদক্ষেপ নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ন্যায়বিচারের দাবির প্রতিফলন।
⚖️ বিচার বিভাগের ঐতিহাসিক ঘোষণা
২১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদনকে “ঐতিহাসিক দলিল” ঘোষণা করে এবং এটিকে “জুলাই রেভুলেশন ২০২৪” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তিন মাসের মধ্যে গেজেট নোটিফিকেশন জারির নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই বিষয়টি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গবেষণা ও শিক্ষা ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
📜 জাতিসংঘের প্রতিবেদন ও গণ-প্রমাণের গুরুত্ব
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালকে ঘিরে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের (OHCHR) তথ্যানুসন্ধান দল একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বিক্ষোভকারীদের উপর দমন, হত্যা, গুম, নির্যাতন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের তথ্য লিপিবদ্ধ রয়েছে। প্রতিবেদনটি নিরপেক্ষ ও তথ্যনির্ভর, যা আন্তর্জাতিক মহলেও গুরুত্ব পেয়েছে।
🔥 গণহত্যা ও মানবাধিকারের দায়ীদের বিচার জরুরি
আমরা মনে করি, এই রায় শুধু বিচারপ্রাপ্তির পথ উন্মুক্ত করেনি, বরং সরকার ও প্রশাসনের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—দায়মুক্তি আর নয়, জবাবদিহি চাই। যদি এই গণহত্যার বিচার না হয়, তবে ভবিষ্যতে আরেক ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঠেকানো কঠিন হবে।
এটি জাতীয় নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের জন্য সরাসরি হুমকি।
📣 আমাদের দাবি
মানুষের জন্য আইনি সহায়তা (মাজআসা) সংগঠন সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত দাবি জানায়:
- তিন মাসের মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করুন।
 - জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে সরকারি দলিলে অন্তর্ভুক্ত করে তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করুন।
 - গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করুন।
 - মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার উপর জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করুন।
 - ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করুন।
 
✊ জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পক্ষে এই আমাদের অঙ্গীকার
হাইকোর্টের এই রায় জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সুযোগ—আমরা যদি সত্যের মুখোমুখি হই, বিচার প্রতিষ্ঠা করি এবং মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নেই, তাহলে একটি ন্যায্য, গণতান্ত্রিক এবং উন্নয়নমুখী বাংলাদেশ গড়ার পথ নিশ্চিত হবে।
আমরা ঐতিহাসিক দায় এড়িয়ে যেতে পারি না।
বিচার হতেই হবে, এবং তা এখনই।
— মানুষের জন্য আইনি সহায়তা (মাজআসা)
